অনলাইন ডেস্ক, 28 জুলাই 2024: পুলিশের চোখে শুধু আগরতলা রেল স্টেশনেই বাংলাদেশী নাগরিকের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু সীমান্ত ডিঙিয়ে রেলস্টেশন যাওয়ার আগে মাঝপথে পুলিশ তাদের আটক করতে পারছে না। রহস্য জনক এ বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের মনে দাগ কাটতে শুরু করেছে।
প্রতিদিন সংবাদ শিরোনামে উঠছে আগরতলা রেল স্টেশনের বাংলাদেশী নাগরিক আটক হওয়ার ঘটনা। কিন্তু গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা এতগুলি থানার পুলিশ কেন অন্যান্য জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই বাংলাদেশি নাগরিকদের জালে তুলতে পারছে না ? অবাক করার মত এই ধরনের প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে দানা বাধা স্বাভাবিক।
এবার আগরতলা রেল স্টেশন থেকে একসাথে ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিককে পুলিশ জালে তুলেছে। পুলিশের বক্তব্য গোপন খবরের ভিত্তিতে শনিবার ২৩ জন বাংলাদেশীকে জালে তুলেছে। ধৃতরা সকলে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের সকলের বয়স ১৮ থেকে ৩০ -এর মধ্যে। জিআরপি পুলিশ এবং আরপিএফ তাদের আটক করেছে।
তারা হাম সাফার এক্সপ্রেস ট্রেন দিয়ে ভারতের দক্ষিণাংশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আগরতলা রেল স্টেশনের দক্ষ পুলিশ কর্মীরা তাদের ধারাবাহিকভাবে জালে তুলেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো মাস খানিকের মধ্যে শতাধিকের বেশি বাংলাদেশের নাগরিক কিভাবে আগরতলা রেল স্টেশনে এসেছে।
তারা যে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করুক না কেন বিভিন্ন থানা ডিঙিয়ে তারা রেল স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে। অর্থাৎ বিমানে করে সীমান্ত থেকে তারা রেল স্টেশনে পৌঁছে গেছে না। অথচ অন্যান্য থানার পুলিশ টের পাচ্ছে না এবং পুলিশের গোয়েন্দা শাখা পর্যন্ত কিছু বলতে পারেনা সেটা কিভাবে হয়? তবে মাঝে মধ্যে কিছু থানার মধ্যে স্থানীয়রা খবর পৌঁছানোর পর পুলিশ বাংলাদেশে নাগরিক আটক করতে তৎপর হয়।
এদিকে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দর থেকে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ ৬ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করেছে। আবারো এমবিবি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার ৬ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী নাগরিক! এমবিবি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার ৬ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী নাগরিক আটক হয়েছে।
এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এয়ারপোর্ট থানার ওসি অভিজিৎ মন্ডল জানান, শনিবার এমবিবি বিমান বন্দরের সন্দেহ জনক ভাবে ঘোরাফেরা করার সময় সি আই এস এফ তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে তারা কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। পরে তাদের বিমান বন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ।
রবিবার তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানান। তবে এই অবৈধ ভাবে বাংলাদেশী নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ত্রিপুরা রাজ্যের সীমন্ত নিরাপত্তারক্ষী কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী বি এস এফ -এর ভূমিকা রহস্যজনক। আসলে শস্যের মধ্যে ভূত থাকলে যা হয় সেটাই হচ্ছে বলে ধারণা একাংশের।
পুলিশ যদি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতো বা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতো তাহলে আগরতলা রেল স্টেশন নয় শুধু, সীমান্ত ডিঙিয়ে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করা মাত্রই তারা আটক হতে পারতো। তবে বরাবরই বিএসএফের জোয়ানদের ভূমিকাও অত্যন্ত চিন্তাজনক।
এত পরিমানে সীমান্ত ডিঙিয়ে ভারতে প্রবেশ করার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে সেটা মূলত পুলিশের সুষ্ঠু তদন্তেই উঠে আসতে পারে। কিন্তু পুলিশ বাংলাদেশি নাগরিক আটক করে শুধুমাত্র এতটাই বলছে যে তদন্ত চলছে। পরবর্তী সময় তদন্তে কি বের হয়ে এসেছে সেটা নিয়ে মুখ খোলার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করছে না।
এভাবে চলতে থাকলে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি নাগরিক ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুর্বিসহ হতে পারে। কার মদতে এ ধরনের অনুপ্রবেশ চলছে সেটা উঠে আসবে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে। তবে তদন্ত কতটা করা হচ্ছে সেটা যথেষ্ট চিন্তা জনক। তবে এভাবে ভারতের বাংলাদেশী নাগরিক প্রবেশ করলে ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ। এর দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না পুলিশ এবং বিএসএফ জওয়ানরা।