অনলাইন ডেস্ক, ৩০ জুলাই 2024: মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে বাবা রক্তে মাংসে দুই ছেলেকে সমাজের দশটা মানুষের মতো বড় করে তুলেছে, সেই জগদ্ধাত্রী বাবার ঠাঁই হচ্ছে না দুই ছেলের ঘরে। কখনো হাত-পা বেঁধে মারধর, আবার কখনো ঘর থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে এক অসহায় পিতাকে।
এই মানবতা লঙ্ঘনকারী ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে আমতলী থানাধীন কাঞ্চনমালা এসবি স্কুল সংলগ্ন এলাকায়। জানা গেছে রাজেন্দ্র বিশ্বাসকে গত ২-৩ মাস আগে তার ছোট ছেলে মন্টু বিশ্বাস বিছানার সাথে বেঁধে মারধর করে। কোমর ভেঙ্গে দেয় পাষণ্ড। তারপর থেকে রাজেন্দ্র বিশ্বাস বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে যান।
সেই ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। পরে স্থানীয় কাঞ্চনমালা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত অনুসারে অসুস্থ ও রাজেন্দ্র বিশ্বাসকে ওনার বড় ছেলে তাপস বিশ্বাসের কাছে দিয়ে দেয় সেবা-যত্ন করার জন্য। এই অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে রাজেন্দ্র বিশ্বাসের বড় ছেলে তাপস বিশ্বাস অসুস্থ বাবাকে আধনগ্ন নিজ বাড়িতে এনে ফেলে রেখে যায়।
ঘটনাটি চাউর হতেই স্থানীয় এলাকাবাসীরা সহ পঞ্চায়েত সদস্যরা ছুটে আসেন। এই ঘটনার খবর যায় সদর মহকুমা শাসক। সদর মহকুমা শাসকের নির্দেশে ছুটে আসেন বিক্রমনগরের তহশীলদার এবং আমতলী থানার পুলিশ। মঙ্গলবার আবারও অসুস্থ রাজেন্দ্র বিশ্বাসের এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে সকলেই হতবাক হয়ে যায়।
পরে পুলিশকে দেখে তাপস বিশ্বাস ভয়ে নিজের বাবাকে আবার তার বাড়িতে নিয়ে যায়। যতদূর জানা গেছে, এই ঘটনায় বিক্রমনগর তহশীলদারের পক্ষ থেকে ৩১ জুলাই সদর মহকুমা শাসকের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। তারপরেই মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে এই ধরনের ঘটনায় গোটা এলাকার মানুষ দাবি তুলছে সমাজে এই ধরনের ঘটনা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
রাজেন্দ্র বিশ্বাসের দুই ছেলে মন্টু বিশ্বাস এবং তাপস বিশ্বাসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। মহকুমা প্রশাসন এই ঘটনায় কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেদিকেই তাকিয়ে আছে গোটা এলাকার মানুষ। তবে অভিযুক্ত দুই পুত্রের বিরুদ্ধে প্রশাসন যদি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে আগামী দিন এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা বন্ধ হবে বলে মনে করছে এলাকাবাসী।