অনলাইন ডেস্ক, 29 জুলাই 2024: সব অংশের মানুষের দিকে লক্ষ্য রেখে 2024-25 অর্থবছরের কেন্দ্রীয় বাজেট তৈরী করা হয়েছে। এবারের বাজেটে চারটি ক্ষেত্রের উন্নয়নের উপর সবচেয়ে বেশী নজর দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া গরীব অংশের মানুষের কল্যাণে এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশী নজর দেওয়া হয়েছে।
আজ বিকালে রাজ্য অতিথিশালায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী জুয়েল ওরাং কেন্দ্রীয় বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে একথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, তাছাড়াও মহিলাদের বিকাশ, যুবকদের প্রশিক্ষণ এবং তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করা, কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত গঠনের প্রতিচ্ছবি এবারের বাজেটে স্থান পেয়েছে। বিকশিত ভারত গঠন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত লক্ষ্যে। ইতিমধ্যে ভারতের ৩ লক্ষ ৫০ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে বিকশিত ভারতের অভিযান চালানো হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিগণ ও ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের আধিকারিকগণ গেছেন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, সংসদে বাজেট পেশের পর তা রূপায়ণের কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। নিতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের শহর ও গ্রামের অবস্থার একটা রোড ম্যাপ তৈরী করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে এখন কাজ হবে। এবারের বাজেটে যে সমস্ত বিষয়ের উপর জোর দেয়া হয়েছে তা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরে ৪১ কোটি যুবক-যুবতীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে।
এজন্য ১.৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যুবক, যুবতীরা যাতে স্ব রোজগারী হতে পারেন সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় পঁচিশ হাজার গ্রামীণ সড়ককে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুদ্রা লোনের উর্দ্ধসীমা ১০ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। দেশের ১০০-র মতো শহরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলা হবে। নেশন্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় ১২টি নতুন ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি মন্ত্রকের জন্য ১.৫২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৪ কোটি ঘর নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে গরীব অংশের মানুষের জন্য ১ কোটি আবাস নির্মাণে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের গরীবদের জন্য অতিরিক্ত আরও ৩ কোটি আবাস নির্মাণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি জানান, এবারের বাজেটে জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রকের বরাদ্দ ৭৩.৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী জানান, জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলির সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জনজাতীয় উন্নত গ্রাম অভিযান প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। দেশের ৬৩ হাজার গ্রামকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ এতে উপকৃত হবেন।
মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন ২০১৪-১৫ সালে জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪,৪৯৭.৯৬ কোটি টাকা। 2024-25 অর্থ বছরে এই বরাদ্দ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩,০০০ কোটি টাকায়৷ তিনি জানান, একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলগুলির উন্নয়নের দিকে এবারের বাজেটে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে৷
প্রত্যন্ত এলাকাগুলির শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ৬,৩৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ড্রপ আউট কমানোর লক্ষ্যে প্রি-মেট্রিক স্কলারশিপে ৪৪০.৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে পোষ্ট মেট্রিক স্কলারশিপে ২,৪৩২.৬৮ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে৷
জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী শ্রী ওরাং বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে। এই অঞ্চলের শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চলতি বছরেই উত্তর পূর্ব ট্রান্সফরমেটিভ ইন্ডাষ্ট্রিয়ালাইজেশন স্কিমের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দশ বছরের এই প্রকল্পের জন্য ১০,০৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ তিনি জানান, নর্থ-ইষ্ট স্পেশাল ইনফাস্ট্রাকচার ডেভেলাপমেন্ট স্কিমে ত্রিপুরার জন্য ৪৫৮ কোটি টাকার ১৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যে জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে ও অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।