অনলাইন ডেস্ক, ১১ নভেম্বর, ২০২৪। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের গত ৬ জুলাই, ২০২৪ তারিখের আদেশ অনুসারে মহিলা প্রধানদের তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়টি এবং তার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যাগুলি পর্যালোচনা করার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি দু’দিনের পরামর্শমূলক সেমিনার আয়োজন করার জন্য কিছু রাজ্যকে বেছে নিয়েছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরাও রয়েছে।
ত্রিপুরা সরকারের গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব ডা. সন্দীপ আর রাঠোড়, ভারত সরকারের পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের অধিকর্তা রমিত মৌর্য এবং পুনের যশোদার ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল, ড. মল্লিনাথ কালশেট্টির উপস্থিতিতে আজ দু’দিনের এই পরামর্শমূলক সেমিনারের উদ্বোধন হয়।
সেমিনারে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিকিম, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং ত্রিপুরা রাজ্যের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। ত্রিপুরা থেকে জিলা পরিষদের চারজন মহিলা সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির প্রধান, স্ব-সহায়ক দলের সদস্যরা, সিপার্ড, ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি, ত্রিপুরা এবং মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিগণ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৬টি রাজ্যের প্রায় ৮০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এ ধরনের সেমিনার মহিলা জনপ্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন বিকাশে সহায়ক হবে।
তাছাড়াও মহিলা প্রতিনিধিদের সংবেদনশীলতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার মাধ্যমে মহিলাদের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।সেমিনারে গ্রামপ্লোয়ন এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব, ডা. সন্দীপ আর রাঠোড় কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই ধরণের সেমিনার আয়োজনের ক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে বেছে নেওয়ার জন্য এবং সেমিনারের গুরুত্ব সম্পর্কেও বক্তব্য রাখেন।
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব মমতা ভর্মা অনলাইনে সেমিনারে যোগ দেন এবং সেমিনার সম্পর্কে মূল বক্তব্য প্রদান করেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রকের অধিকর্তা রমিত মৌর্য সেমিনারের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। যশোদা, পুনের ডিডিজি ড. কালশেট্টি পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানে প্রক্সি মহিলাদের অংশগ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেন।
সেমিনারে ত্রিপুরা পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা, প্রসূন দে সাম্প্রতিক অতীতে নারী ক্ষমতায়নের জন্য ত্রিপুরা পঞ্চায়েত দপ্তর কর্তৃক নেওয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এ বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে, ত্রিপুরায় পাঁচটি পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে নারী-নির্ভর হয়ে উঠেছে।
এই পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলিতে সমস্ত নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তারা হলেন মহিলা। পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলি হল মাতাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি, খিলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, থাকছরা গ্রাম পঞ্চায়েত, করইয়ামুড়া গ্রাম পঞ্চায়েত, হালহুলি গ্রাম পঞ্চায়েত।
এই পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলির লক্ষ্য হল মহিলারা যাতে শুধু অংশগ্রহণই না করে, পাশাপাশি সিদ্ধান্ত গ্রহণেও যাতে সাবলীলভাবে মুন্সিয়ানা দেখাতে পারে, যা মহিলাদের সামাজিক বিকাশে সহায়ক হবে। সেমিনারে পঞ্চায়েতের যুগ্ম অধিকর্তা, অসিত কুমার দাস, উদ্বোধনী পর্বের ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য পেশ করেন। সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর, আমন্ত্রিত বক্তারা নারী ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আগামীকাল সেমিনারের দ্বিতীয় দিনে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল মাতাবাড়ি আরডি ব্লকের অন্তর্গত হুলাক্ষেত গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জিরানিয়া আরডি ব্লকের অধীন পশ্চিম মজলিশপুর পরিদর্শন করে নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধি সহ আধিকারিকদের সাথে মত বিনিময় করবেন।