অনলাইন ডেস্ক, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪: ঊনকোটি জেলায় সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষি ও প্রাণীপালকদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তা দেওয়ার জন্য দপ্তরের আধিকারিকদের উদ্যোগী হতে হবে। কৈলাসহর সার্কিট হাউসে আজ ঊনকোটি জেলায় মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা যেন সুবিধাভোগীরা সঠিক সময়ে পেতে পারেন তার জন্যও বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সম্পা দাস পাল, গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান মোহম্মদ বদরুজ্জামান, কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুমতি দাস, পেঁচারথল বিএসি’র চেয়ারম্যান সজল চাকমা, কুমারঘাট বিএসি’র চেয়ারম্যান তপনজয় রিয়াং, কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর দেব, চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান বিনয় সিং, কুমারঘাট পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন বিশ্বজিৎ দাস, কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলারাণী দেবরায়, জেলাশাসক ডি কে চাকমা, মৎস্য, তপশিলি জাতি কল্যাণ ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা, অতিরিক্ত অধিকর্তা, কৈলাসহর ও কুমারঘাটের মহকুমা শাসকগণ, বিডিওগণ গ্রামোন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনীয়ার, জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রমুখ।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মসূচি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। পর্যালোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, চন্ডীপুর ব্লকের সতেরো মিঞার হাওরে বিশাল জলাশয়কে নিয়ে মৎস্য দপ্তরের ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকোয়া কালচার প্রজেক্ট সরকারের একটি অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। খুব শীঘ্রই এই বিশাল প্রজেক্টের উদ্বোধন হবে। এই প্রজেক্টের কাজ শুরু হলে বহু মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস। পর্যালোচনা সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর থেকে জানানো হয় সম্প্রতি বন্যার পর ঊনকোটি জেলায় ১৩৪টি গৃহপালিত পশু-পাখীর চিকিৎসা, টিকাকরণ ও সচেতনতা শিবির করা হয়।
এই শিবিরগুলি থেকে ৭,২৮৬টি গৃহপালিত পশু ও ১২,৩৬০টি গৃহপালিত পাখিকে (হাস, মোরগ, সহ) টিকাকরণ করা হয়৷ এতে ৪,১৯৯টি প্রাণীপালক পরিবার উপকৃত হয়৷ মৎস্য দপ্তর থেকে জানানো হয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের কানি প্রতি জলাশয়ে ৬,৮০০টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়া মাছের চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কানি প্রতি জলাশয়ে ৬,৪০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ তেমনি বন্যার দরুণ জলাশয় সংস্কারের জন্য কানি প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তর থেকে পিএম-অজয় প্রকল্পে বিভিন্ন উপাদানের উপর আলোচনা করা হয়৷
মন্ত্রী সুধাংশু দাস পর্যালোনচা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, তপশিলি জাতি ভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে যারাই যোগ্য তারা সবাই যাতে এর সুযোগ পায় তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ এক্ষেত্রে দপ্তরের যাতে কোন ত্রুটি না থাকে সেদিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে৷ আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে তিনি ইতিবাচক মনোভাব, সততা ও অধ্যাবসায়ের সাথে কাজ করতে বলেন। তাহলেই সব ক্ষেত্রে সফলতা আসতে বাধ্য। চলতি অর্থবর্ষের আরও চার মাস বাকি রয়েছে৷ এই সময়ের মধ্যে ত্রুটিগুলি কাটিয়ে উঠতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আধিকারিকদের কাজ করতে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।