অনলাইন ডেস্ক, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪: পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে আজ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক তপশিলি জাতি কল্যাণ, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্য দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস। সভায় জেলার তপশিলি জাতি কল্যাণ, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্য দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও কর্মসূচি রূপায়ণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, বিধায়ক মীনারাণী সরকার, বিধায়ক সুদীপ সরকার, বিধায়ক তথা আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মণিকা দাস দত্ত, জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানগণ, বিভিন্ন নগর পঞ্চায়েত ও পুরপরিষদের চেয়ারপার্সনগণ, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. বিশাল কুমার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকগণ সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস তপশিলি জাতি কল্যাণ, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও মৎস্য দপ্তরের উন্নয়ন কর্মসূচির পর্যালোচনা করেন৷
তিনি বলেন, এই তিনটি দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবার সুবিধা যেন প্রকৃত সুবিধাভোগীরা পান তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ গ্রামীণ এলাকায় রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি করতে মৎস্যচাষ ও প্রাণীপালনকে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। মৎস্যচাষ ও প্রাণীপালনের মাধ্যমে সহজে আত্মনির্ভর হওয়া যায়৷ তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলার সমস্ত জলাশয়গুলিকে মাছ চাষের উপযোগী করে তুলতে ও মাৎস্যচাষের আওতায় নিয়ে আসতে হবে৷ প্রাণীজ খাদ্য উৎপাদনেও সরকার গুরুত্ব আরোপ করেছে৷ এই লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে আসা হচ্ছে।
যা আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷ সভায় তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের আধিকারিক দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নপ্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন৷ তিনি জানান, চলতি বছরে পশ্চিম জেলার ৯টি ব্লকের এসসি সম্প্রদায়ের ৩০৭ জনকে সেলাই মেশিন, ৫২ জনকে পাম্প মেশিন, ৪৮ জনকে বাদ্যযন্ত্র দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় জেলার ৬১ জন সাফাই কর্মীকে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে৷
২১ জন চর্ম শিল্পীকেও এই যোজনায় ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। সভায় মৎস্য দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত পশ্চিম জেলার ৮,৭২০টি মৎস্যজীবি পরিবারকে ন্যাশনাল ফিসারিজ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য কিষাণ সমৃদ্ধি যোজনার আওতাভুক্ত করা হয়েছে৷ এই যোজনায় সুবিধাভোগী পরিবারগুলিকে ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মৎস্যচাষে সহায়তা দেওয়া হবে৷
গ্রুপ এক্সিডেন্টাল ইনসুরেন্স প্রকল্পে জেলার ৩,২৭৮টি মৎস্যজীবি পরিবারের সদস্যকে বীমার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া এবছর জেলার ২১ জনকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এনইসি প্রকল্পে জেলার ৯৩টি পরিবারকে মাছ চাষের পুকুর খনন করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ১৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, এবছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রাণীপালন বিষয়ক ৯৯৫টি সচেতনতামূলক শিবির করা হয়েছে৷ প্রাণী টিকাকরণ শিবির করা হয়েছে ২,৬৯১টি এবং প্রাণী স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করা হয়েছে ৫৭৩টি৷ এই শিবিরগুলির মাধ্যমে ৫,৬৭,৯৩৭ টি গবাদি প্রাণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিনামূল্যে প্রায়োজনীয় ঔষধ দেওয়া হয়েছে। ৬,৮৮,৯৯৫টি গবাদি প্রাণীকে বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়েছে।