অনলাইন ডেস্ক, ১০ জানুয়ারী, ২০২৫: রাজ্যে একটি অত্যাধুনিক টায়ার-থ্রি ডেটা সেন্টার স্থাপনের জন্য মেসার্স এনআইএক্সআই-সিএসসি ডাটা সার্ভিস লিমিটেডের সঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি দপ্তর সমঝোতা পত্রে স্বাক্ষর করেছে। টেলি যোগাযোগ সংস্থা মেসার্স ভারতী এয়ারটেল লিমিটেডকে ত্রিপুরায় একটি অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের জন্য লিচুবাগান এলাকায় ১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে৷
এই সংস্থাটি ২০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে। এই ডেটা সেন্টার স্থাপিত হলে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজ বিধানসভা অধিবেশনে একটি বেসরকারি প্রস্তাবের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় একথা জানান।
বিধায়ক অভিষেক দেবরায়ের জনস্বার্থে আনা ‘দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা আইটি কোম্পানিগুলিকে রাজ্যে বিনিয়োগ সহ তাদের প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করে রাজ্যে আইটি সেক্টরকে আরও সম্প্রসারিত করার পাশাপাশি রাজ্যের কর্মপ্রার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য এই সভা অনুরোধ জানাচ্ছে’ শীর্ষক বেসরকারি প্রস্তাব উপর আলোচনা করতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, তাছাড়াও মেসার্স পিভিএম ইনভেনসিস প্রাইভেট লিমিটেড রাজ্যে টায়ার-ফোর ডেটা সেন্টার স্থাপনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। এই ডেটা সেন্টারে ১০০ জনেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে৷ এই বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেন বিরোধী দলনেতা বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরী, বিধায়ক শৈলেন্দ্র চন্দ্র নাথ।
বিধানসভায় আলোচনা করতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় জানান, রাজ্যের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনতে এবং তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে ২০২১ সালে ত্রিপুরা ডেটা সেন্টার পলিসি ২০২১ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। এই নীতির উদ্দেশ্য হলো তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষ করে ডেটা সেন্টার শিল্পে আরও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তিনি জানান, ত্রিপুরা আইটি/আইটিইএস স্টার্টআপ স্কিমে ২৬টি স্টার্ট আপ ১ কোটি টাকারও বেশি সহায়তা পেয়ে সফল স্টার্টআপ হয়ে উঠেছে।
এই স্টার্টআপগুলিতে ১৩৫ জনেরও বেশি শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই ২৬টি স্টার্টআপ সহ মোট ১২৭টি স্টার্টআপ ডিপিআইআইটি-এর আওতায় নথিভুক্ত হয়েছে। এই স্টার্টআপগুলিতে ৮০০ জনেরও বেশি যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি জানান, নিউ জেনারেশন ইনোভেশন নেটওয়ার্কের আওতায় ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৫৫টি প্রজেক্টের আওতায় ১৬০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা সহায়তা করা হয়েছে।
তিনি জানান, রাজ্যে বেসিজ ফান্ড সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা রাজ্যে তাদের অফিস স্থাপন করেছে। সংস্থাটি দেশ ও বিদেশে অর্থনৈতিক পরিষেবা দেয়৷ এই সংস্থায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আই-লোগিট্রন টেকনোলজিস সংস্থাটি রাজ্যে তাদের অফিস স্থাপন করে সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট করছে৷ এখানে ১০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কে আরও ৭টি আইটি সংস্থা কাজ করছে এবং রাজ্যের ৭৫ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনায় ২০২০-২১ থেকে 2024-25 আর্থিক বছর পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭৭১ জন শিক্ষার্থীকে ২৫.৩৯ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পড়াশুনার সুযোগ সৃষ্টি করতে গত অক্টোবর মাসে ১৯টি কলেজে ওয়াইফাই সুবিধা চালু করা হয়েছে। সম্প্রতি বাকি ১১টি কলেজেও ওয়াইফাই ব্যবস্থা সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামীদিনে রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প ও উদ্যোগের মাধ্যমে দেশ বিদেশের খ্যাতনামা আইটি কোম্পানিগুলিকে রাজ্যে বিনিয়োগের উৎসাহ ও সহায়তা দেবে৷ আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সভা কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়৷