মুখ্যমন্ত্ৰী সমীপেষু, চিকিৎসা সহায়তায় মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ৭০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা মঞ্জুর

অনলাইন ডেস্ক, ১ জানুয়ারী , ২০২৫: ইংরেজী নববর্ষের প্রথম দিনেই মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচিতে আসা সমস্যাপীড়িত জনগণের অভাব অভিযোগের কথা শুনেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচির ৩৭তম পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের সমস্যা, অভাব ও অভিযোগ নিরসনে মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশীর ভাগই চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে এসেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা চিকিৎসায় সহায়তার আবেদন নিয়ে আসা ৩ জনকে তৎক্ষণাৎ মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ৭০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার মঞ্জুর করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষুতে আজ কৈলাসহরের দূর্গাপুরের বেলী মালাকার তার ২২ বছর বয়সী ছেলের চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। বেলী মালাকারের স্বামী পেশায় দিনমজুর। তাদের ছেলের গত দেড় বছর ধরে কিডনি সংক্রান্ত রোগে ভুগছে৷ চিকিৎসকগণ বেলী মালাকারের ছেলের শীঘ্রই অপারেশন করানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ বেলী মালাকার তার ছেলের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

বেলী মালাকার তার ছেলের চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বেলী মালাকারের ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে তৎক্ষণাৎ মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ৩০ হাজার টাকা মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি বেলী মালাকারের ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

আগরতলার জয়নগরের সুশান্ত তারণ তার স্ত্রীর চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সুশান্ত তারণের স্ত্রী গত ৪ বছর ধরে ক্যানসার রোগে ভুগছেন। পেশায় বেসরকারি কর্মী সুশান্ত তারণ তার স্বল্প আয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ এবং সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। সুশান্ত তারণ তার স্ত্রীর চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রী সুশান্ত তারণের স্ত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে তৎক্ষনাৎ ৩৫ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে মঞ্জুর করেন।

পাশাপাশি সুশান্ত তারণের স্ত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা ক্যানসার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. এস দেববর্মণকে নির্দেশ দেন। সিমনার পঞ্চবটির নারায়ন গুপ্ত তার চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আবেদন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। নারায়ণ গুপ্ত দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সংক্রান্ত রোগে ভুগছেন। বর্তমানে সপ্তাহে ৩ দিন তাকে ডায়ালিসিস করাতে হচ্ছে। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য নারায়ণ গুপ্ত তার সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানান।

তার আবেদনে সাড়া দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গেই ৫ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে প্রদানের মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি নারায়ণ গুপ্তের চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন। ভাটি অভয়নগরের মোহম্মদ সায়েদ মিঞা তার ছেলের চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সায়েদ মিঞার ছেলে দীর্ঘদিন যাবৎ স্নায়ু রোগে ভুগছে।

চিকিৎসকগণ সায়েদ মিঞার ছেলের মস্তিস্কে অপারেশন করানোর পরামর্শ দেন। এই অপারেশনের জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এই অবস্থায় সায়েদ মিঞা তার ছেলের উন্নত চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রী সায়েদ মিঞার ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মাধ্যমে সায়েদ মিঞার পরিবারকে কিভাবে সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের সচিব তাপস রায়কে নির্দেশ দেন।

এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আসা সিমনার অর্নিকা দেববর্মা, সিপাহীজলা জেলার আমতলীর সোনিয়া আক্তার, আড়ালিয়ার অনিতা ঋষিদাস, চন্দ্রপুরের দুলাল মল্লিক, যোগেন্দ্রনগরের নারায়ণ দে, সোনামুড়ার মতিনগরের রত্ন ঘোষ সহ প্রত্যেককেই চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী, ক্যানসার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. এস দেববর্মা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. সমিত রায় চৌধুরী।

Recent Posts