অনলাইন ডেস্ক, ২ জানুয়ারী , ২০২৫: আর্থসামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে সমাজের দুর্বল অংশের মানুষের জীবনযাত্রার কথা সহজ সরলভাবে সাহিত্যে তুলে ধরতেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ কালজয়ী এই উপন্যাসের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। আজ নলছড়ের দশমীঘাটে তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে অদ্বৈত মল্লবর্মণের ১১১তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্ব দিয়েছে। উৎসবের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির আদান প্রদানের সুযোগ ঘটে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা রাজ্যের তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের মানুষের কল্যাণে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষায় উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে প্রিমেট্রিক ও পোস্টমেট্রিক স্কলারশিপ। গড়ে তোলা হচ্ছে ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাস। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের মহিলাদের ক্ষমতায়নেও সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। অনুষ্ঠানে তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী সুধাংশু দাস অদ্বৈত মল্লবর্মণের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্মের মানুষের কাছে অদ্বৈত মল্লবর্মণের দর্শন ও চিন্তাধারাকে পৌঁছে দিতে হবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি বিধায়ক কিশোর বর্মণ। উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত দে প্রমুখ। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ১১১তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন সমাপ্ত হবে আগামী ৪ জানুয়ারি। এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী মন্ডপ খোলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাঁশ শিল্পী সুব্রত দাসকে অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫, কৈলাসহরের কৃষি বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ রতন দাস, ধর্মনগরের নাট্যশিল্পী সুব্রত দাস, আগরতলার প্রখ্যাত দাবাড়ু আরাধ্যা দাস, সমাজসেবী বিলোনীয়ার লক্ষ্মণ মালাকার, পূর্ব নলছড়ের ক্রীড়াবিদ শুভ্রজিৎ দাসকে অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মারক সম্মান ২০২৫ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাছাড়া অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন বিলোনীয়ার প্রশান্ত সেন ও দ্বিতীয় হয়েছেন সাব্রুমের বিশ্বজিৎ মানিক। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ তাদের হাতে সম্মাননা ও পুরস্কার তুলে দেন।