অনলাইন ডেস্ক, ০৫ জানুয়ারী, ২০২৪: সমাজে বহু কাজ আছে যেগুলি সরকার দ্বারা সম্ভব নয়। এবং বহু জ্বলন্ত সমস্যা রয়েছে যেগুলি সরকার চাইলেও সমাধান করতে পারবে না। এগুলি একমাত্র সামাজিক সংস্থাগুলি সমাধান করতে পারবে। কারণ রাজ্যে ৩৮ শতাংশ গর্ভবতী হয় ১৮ বছরের নিচে নাবালিকারা। এই ভয়ানক সমস্যাটির ক্ষেত্রে ত্রিপুরা প্রথম সারিতে রয়েছে।
এ বিষয়ে মহকুমা শাসকের কাছে তখনই ফোন আসে যখন মেয়েটি বিয়ের পিঁড়িতে বসে। তারপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিয়েটা ভেঙে দেওয়া হলে লক্ষ্য করা যায় ১০ থেকে ১৫ দিন পর আবার আবার অন্য কোথাও নিয়ে ১৪-১৫ বছর বয়সী মেয়েটির বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই এ সমস্যা সরকারের সমাধান করা সম্ভব নয়। সামাজিক সংস্থাগুলি চাইলে এ সমস্যা নিরসনে ভূমিকা পালন করতে পারে।
রবিবার সেবা ও সহায়তা পরিষদের দশম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে এই কথা বললেন সমাজ কল্যাণ এবং সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়। আয়োজিত বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয় এদিন রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। আয়োজিত অনুষ্ঠানের এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস এবং আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। উপস্থিত অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী আরো বললেন, সামাজিক সংস্থাগুলির বৃক্ষরোপণ এবং নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার জন্য দায়িত্ব রয়েছে।
সঠিকভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তরের অন্তর বৃক্ষ রোপন এবং পরিচর্যা করার প্রয়োজন। অপরদিকে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে দায়িত্ব নিতে হবে সামাজিক সংস্থাকে। সামাজিক সংস্থার দায়িত্ব হবে তাদের মধ্যে কেউ যেমন নেশা করবে না, পাশাপাশি তাদের আশেপাশের মানুষজনকে নেশা থেকে দূরে রাখার জন্য সর্তকতা ও সচেতন মূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা। মন্ত্রী বলেন প্রতিবছর মুমূর্ষ রোগীদের জন্য ৪০ হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয় রাজ্যে।
সেই রক্তের চাহিদা মেটাতে সামাজিক সংস্থাগুলিকে এগিয়ে আসার প্রয়োজন। যতগুলি সামাজিক সংস্থা এবং ক্লাব রয়েছে তারা যদি এগিয়ে এসে বছরে একবার করে রক্তদান শিবির করে তাহলে পর্যাপ্ত রক্ত থাকে ব্লাড ব্যাংক গুলির মধ্যে। কিন্তু লক্ষ্য করা যায়, কয়েকটি ক্লাব ও সামাজিক সংস্থার ছাড়া বাকি ক্লাব ও সামাজিক সংস্থা এ ধরনের রক্তদান শিবিরে এগিয়ে আসে না। কিন্তু তারা সকলে যদি এগিয়ে আসে তাহলে রক্ত সংকট হয় না। সুতরাং এধরনের অসংখ্যক সমস্যা রয়েছে যেগুলি সমাধান করার জন্য একমাত্র প্রয়োজন সামাজিক সংস্থাগুলি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের বক্তব্য রেখে তিনি বলেন, সরকারকে উদ্যোগ নিতে হচ্ছে রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করার। কিন্তু কেন বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হচ্ছে বৃদ্ধ মা-বাবাকে? তাই সামাজিক সংস্থাগুলি চাইলে পারে সমাজকে এমনভাবে তৈরি করতে যে একজন মা, বাবাকে যাতে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়। এমনটাই বললেন মন্ত্রী টিংকু রায়। পরে রক্তদান শিবির ঘুরে দেখেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, মন্ত্রী টিংকু রায় এবং মন্ত্রী সুধাংশু দাস। রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন তাঁরা। আগামী দিন তারা যাতে রুটিন মাফিক রক্তদান করে মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচায় তার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান উপস্থিত অতিথিরা।