রাজ্য সরকার ও ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভাষিণী ডিভিশনের সাথে মউ স্বাক্ষর, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে ত্রিপুরা ভাষিণী রাজ্যমের সাথে মউ স্বাক্ষর করেছে : তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫ : রাজ্যে তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ই-ক্যাবিনেট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ই-অফিস পরিষেবায় রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটিগুলিকে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ভাষিণী রাজ্যম সিস্টেমের উপর এক কর্মশালার উদ্বোধন করে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকার ও ভারত সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভাষিণী ডিভিশনের সাথে এক মউ স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, এই মউ স্বাক্ষরের ফলে ত্রিপুরা দেশের অষ্টম রাজ্য এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে ভারত সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভাষিণী ডিভিশনের সাথে মউ স্বাক্ষর করেছে। কর্মশালার উদ্বোধন করে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, এই মউ স্বাক্ষরের ফলে সরকারি বিভিন্ন কাজে রাজ্যবাসীর ভাষাগত সমস্যার সমাধান ঘটবে।

ভাষিণী রাজ্যমের মাধ্যমে রিয়েল টাইম অনুবাদ সম্ভব হবে। যার ফলে জনগণ তাদের নিজস্ব ভাষায় সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম করতে পারবেন। ভাষিণী প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজে নিজস্ব ভাষায় অনুবাদের ফলে সাধারণ মানুষ সহজে জানতে ও বুঝতে পারবেন। বিশেষ করে অনলাইন ডেটা এন্ট্রিতে যে ভাষাগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা দূর হবে। এই সিস্টেম আত্মনির্ভর ভারত ও বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণেও সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে বর্তমান সরকার কলেজ পড়ুয়া ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীদের স্মার্ট ফোন কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের ৩০টি কলেজের মধ্যে ১৯টি কলেজে ফ্রি ওয়াইফাই পরিষেবা চালু রয়েছে। বাকি ১১টি কলেজে ওয়াইফাই পরিষেবা শীঘ্রই চালু করা হবে।

রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ তথ্য আদান প্রদানে আঞ্চলিক ভাষায়ও এই সিস্টেমটির উন্নতিকরণ করা হবে। এই মৌ স্বাক্ষরের ফলে রাজ্য তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভাষিণী ডিভিশনের সিইও অমিতাভ নাগ বলেন, ভাষিণী রাজ্যমের উপর ইতিমধ্যে দেশে ৪টি রাজ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ত্রিপুরায় পঞ্চম কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ভাষিণী রাজ্যম সিস্টেমে দেশের ২২টি গুরুত্বপূর্ণ ভাষা অনুবাদ করা সম্ভব। আগামীদিনে আঞ্চলিক ভাষাগুলির উপরও কাজ করা হবে। অনুষ্ঠানে তিনি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ভাষিণী রাজ্যম সিস্টেম ব্যবহারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজ্য তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে। তিনি বলেন, ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প চালু করেন। এই সিস্টেমের দ্বারা ই-ডিস্ট্রিক্ট পরিষেবা, ই-অফিস সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পগুলি অতি সহজে সাধারণ জনগণ জানতে ও বুঝতে পারবেন।

ভাষিণী প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরাও উপকৃত হবে। তথ্য প্রযুক্তি আদান প্রদানের লক্ষ্যে রাজ্যের প্রতিটি স্কুল ও হাসপাতালগুলিতে ওয়াইফাই পরিষেবা প্রদানের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভাষিণী ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল ম্যানেজার শৈলেন্দ্র পাল সিং।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন রাজ্য তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের অধিকর্তা জেয়া রাগুল গেশান বি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কর্মশালায় ভাষিণী রাজ্যম সিস্টেম ব্যবহারের উপর প্রশিক্ষণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

Recent Posts