এডিএম -স্বামীর কঠোর শাস্তির দাবি এমবিবিএস স্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক, ১২ জানুয়ারী, ২০২৫: ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এডিএম -স্বামীকে উচিত শিক্ষা দিতে এবার মুখ্যমন্ত্রীর পর সরাসরি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গোটা ঘটনা তুলে ধরলেন এ ডি এম -এর উচ্চশিক্ষিত এমবিবিএস ডিগ্রিধারী স্ত্রী। অভিযুক্ত এডিএম ও তার স্ত্রী দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানার বাসিন্দা।

২০২২ সালের মার্চ মাসে ডাঃ এম জে ডিফি-কে বিয়ে করেছিলেন বিলোনিয়ার জেলা শাসক কার্যালয়ের এডিএম পদে কর্মরত কে প্রদীপ কৃষ্ণরাজ। কিন্তু বিবাহের পর থেকেই খাই মিটছে না এডিএম স্বামীর।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে মোটা অংক দাবি করে স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালাতেন তিনি। সম্প্রতি পারিবারিক কলহে এ ডি এম স্বামীর হাতে আক্রান্ত হয়ে এমবিবিএস স্ত্রী এম জে ডিফি গুরুতর আহত হয়েছেন। রবিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ডি এম বাবুর স্ত্রী জানান, প্রতিনিয়ত তার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য নির্যাতন চালাত অভিযুক্ত স্বামী। তারপরও প্রতিমাসে ৪০ লক্ষাধিক টাকা করে এডিএম প্রদীপ কৃষ্ণরাজকে ব্যাংক একাউন্টে দিতেন তার প্রভাবশালী বাবা।

কিন্তু ইদানিং তার ডিমান্ড এতটাই বেড়ে গেছে যে ৪০ লক্ষ টাকায় খাই মিটছে না তার। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে অর্থের লোভে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপর অভিযুক্ত স্বামী কে প্রদীপ কৃষ্ণরাজের বিরুদ্ধে আদালতে গৃহস্থ হিংসার অভিযোগ জানায় নির্যাতিতা স্ত্রী। তারপর গত বুধবার ডাক্তার এম জে ডিফির বাবা বিলোনিয়া এডিএম -এর সরকারি আবাসনে আসে।

শশুর মশাইকে দেখে এডিএম বাবু অগ্নি শর্মা হয়ে আবাসন থেকেই বেরিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত এডিএম বাবুর শশুর আবাসন থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হয়। তারপর একটা সময় এডিএম স্বামী সরকারি আবাসনে এসে তার স্ত্রী ডা. এম জে ডিফি -র উপর বেধড়ক মারধোর করেন। বা হাত ভেঙে দেন এবং অভিযুক্ত এ ডি এম স্বামী তার স্ত্রী এম জে ডিফি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে অপপ্রচার চালায় স্থানীয়দের কাছে।পরবর্তী সময়ে নিজেকে রক্ষা করতে পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চান তিনি। কিন্তু যখন শুনে এডিএম -এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তখন তারা ফোন কেটে দেয়।

তারপর বিলোনিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দাখিল করতে চাইলে মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে পুলিশ। রবিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি জানিয়েছেন ঘটে যাওয়া এই ঘটনাগুলি। তাদের বাড়ি তামিলনাড়ুতে। আরো অভিযোগ নির্যাতন নিয়ে মুখ খোলার চেষ্টা করলে তাকে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত স্বামী হুমকি দেন যদি মুখ খুলে তাহলে কোন বিচার পাবে না। কারণ প্রশাসনিক উচ্চস্তরে তিনি কর্মরত রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত স্বামীর নির্যাতন মুখ বুজে আজ সহ্য করতে না পেরে পুলিশের দারস্থ হয়েছিলেন।

কিন্তু পুলিশের ভূমিকা বুঝতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী দ্বারস্থ হন। তারপর গোটা ঘটনা প্রমাণ সহ দক্ষিণ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন তিনি। তিনি আরো জানান তার সাথে যে ঘটনা গুলি অভিযুক্ত স্বামী তথা এডিএম করেছেন তা যাতে আর কোন মেয়ের সাথে না হয়ে তার জন্য বিচার চায়। কারণ বহু স্বপ্ন নিয়ে তাকে বিয়ে দিয়েছিলেন তার বাবা। তার বাবা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাই বলে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত জামাতার দাবি অনুযায়ী পণ মিটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেয়েকেই অভিযুক্ত জামাতার কাছ থেকে রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আইনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান উচ্চশিক্ষিত নির্যাতিতা স্ত্রী। এখন দেখার বিষয় পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে কেনা।