অনলাইন ডেস্ক, ২১ নভেম্বর, ২০২৪: রাজ্যে মাছ চাষে ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকুয়া পার্ক গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা ঊনকোটি জেলার সতের মিঞার হাওরকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ১০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ণের জন্য ৪৩ কোটি টাকার মঞ্জুরী দিয়েছে।
আজ প্রজ্ঞাভবনের ১নং হলে রাজ্যভিত্তিক বিশ্ব মৎস্য দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মৎস্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে প্রায় ২ লক্ষ মাছ চাষি রয়েছেন। ত্রিপুরা রাজ্যে কৃষি, উদ্যানপালন, প্রাণীপালন প্রভৃতি যে প্রাথমিক সেক্টর রয়েছে তার মধ্যে মৎস্য সেক্টর অন্যতম৷ স্বল্প সময়ে মাছ চাষে স্বনির্ভর হওয়া যায়।
রাজ্যে জিএসডিপি’র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ কৃষি সহ সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক সেক্টর থেকে আসে৷ এই সেক্টর যত বেশী শক্তিশালী হবে ততই আমাদের দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে। অনুষ্ঠানে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে বছরে ১ লক্ষ ১৭ হাজার মেট্রিক টন মাছের চাহিদা রয়েছে। রাজ্যে বছরে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়। ঘাটতি রয়েছে ৩২ হাজার মেট্রিক টন।
অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ প্রভৃতি স্থান থেকে মাছ আমাদানি করে আমাদের এই ঘাটতি পূরণ করতে হয়। তাতে আমাদের রাজ্যের অর্থ বাইরে চলে যায়। এই ঘাটতি পূরণে রাজ্যের পরিত্যক্ত জলাশয়গুলিকে চিহ্নিত করে মৎস্যচাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মৎস্যচাষিদের সহায়তায় মুখ্যমন্ত্রী মৎস্য বিকাশ যোজনা চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মৎস্য দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মাছ চাষের সাথে যারা যুক্ত আছেন তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য আজ এই দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন আইসিএআর রিজিওন্যাল সেন্টারের (ত্রিপুরা) প্রিন্সিপাল সাইন্টিস্ট ড. বুরহান ইউ চৌধুরী এবং লেম্বুছড়াস্থিত মৎস্য মহাবিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক এ বি প্যাটেল৷ উপস্থিত ছিলেন মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস।
অনুষ্ঠানে মৎস্য চাষ বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে রেণু থেকে উন্নত পোনা তৈরী করার জন্য গোমতী, ঊনকোটি ও উত্তর ত্রিপুরার তিনজন মৎস্য চাষিকে, বেষ্ট হ্যাচারি তৈরী করার জন্য সিপাহীজলা, ঊনকোটি ও খোয়াই জেলার তিনজনকে, সেরা মাছ চাষি ঊনকোটি, দক্ষিণ ও পশ্চিম জেলার তিনজনকে, মাছ চাষে মহিলা স্বউদ্যোগী খোয়াই, ঊনকোটি ও ধলাই জেলার তিনজনকে, সেরা গলদা চিংড়ি মাছ চাষি হিসেবে দক্ষিণ জেলার বাবলু বর্মণকে এবং রঙিন মাছ চাষি হিসেবে ঊনকোটি জেলার তুম্পি নম: শূদ্রকে পুরস্কৃত করা হয়।
এছাড়া সেরা জেলা হিসেবে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে গোমতী জেলা, দক্ষিণ জেলা ও উত্তর জেলা। এছাড়াও বেষ্ট মহকুমা হিসেবে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে শান্তির বাজার, উদয়পুর ও অমরপুর। মন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে শংসাপত্র ও মেমেন্টো তুলে দেন। এছাড়া মন্ত্রী সুধাংশু দাস প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় মাছ বিক্রির জন্য বেলাবরের মানিক সরকারের হাতে আইসবক্স সহ একটি অটো গাড়ির চাবি তুলে দেন। এ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার ৬০ শতাংশ ও সুবিধাভোগী ৪০ শতাংশ অর্থ বহন করেছেন। এজন্য মোট ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।