অনলাইন ডেস্ক, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪: দিব্যাঙ্গজনদের অবহেলা করা উচিত নয়। তাদের ছাড়া দেশের উন্নয়ন পরিপূর্ণতা পেতে পারে না। আজ আগরতলার ক্ষুদিরাম বসু ইংরেজী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক আন্তর্জাতিক দিব্যাঙ্গ দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিঙ্কু রায় একথা বলেন।
আন্তর্জাতিক দিব্যাঙ্গ দিবস উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এদিন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক খেলো ত্রিপুরা প্যারা গ্যামসেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিঙ্কু রায় বলেন, দিব্যাঙ্গজনদের কল্যাণে রাজ্যে ‘স্টেট পলিসি ফর দিব্যাঙ্গজন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে দিব্যাঙ্গজনেরা যাতে বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের জন্য ইউনিক ডিসএবিলিটি আইডেন্টিটি কার্ড চালু করেছে। রাজ্যে প্রায় ৪০ হাজার জন দিব্যাঙ্গকে শিবির করে এই কার্ড দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আরও বলেন, দিব্যাঙ্গজনদের কল্যাণে বর্তমান রাজ্য সরকার দিব্যাঙ্গজনদের মাসিক ২০০০ টাকা করে ভাতা দিচ্ছে। ৮ জেলায় ৮টি জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
উজান অভয়নগরের বাক পুনর্বাসন বিদ্যালয়টিকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই বিদ্যালয়টিকে মাধ্যমিক ও দ্বাদশস্তরে উন্নীত করার সরকারের চিন্তাভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গজন মেয়েদের বিবাহ করলে আগে ৫০০০ টাকা সহায়তা করা হতো। এখন সহায়তা করা হয় ৫০ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি বলাই গোস্বামী বলেন, দিব্যাঙ্গজনরা অন্যান্যদের চাইতে কম নয়।
তারাও সুযোগ ও সুবিধা পেলে অনেক কিছু করতে পারে। রাজ্য সরকার তাদের কল্যাণে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক মেঘা জৈন ও সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস। স্বাগত ভাষণে জেলা সমাজশিক্ষা আধিকারিক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ১৯৯২ সালে রাষ্ট্র সংঘ আজকের দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিব্যাঙ্গ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, কর্পোরেটর সুখময় সাহা, কর্পোরেটর প্রফেসর (ডা.) অলক ভট্টাচার্য, কর্পোরেটর হিমানী দেববর্মা, কর্পোরেটর মনিমুক্তা ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ এবছর পশ্চিম জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ জন কৃতি দিব্যাঙ্গ ছাত্রছাত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রকল্পে ১ হাজার টাকার চেক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ জন কৃতি দিব্যাঙ্গ ছাত্রছাত্রীকে ১৫০০ টাকার চেক দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
মূল অনুষ্ঠানের পর দিব্যাঙ্গজন ছেলেমেয়েরা সটপাট থ্রো, ৫০ মিটার দৌড়, রিং থ্রো, লং জাম্প, ব্লাইন্ড ক্রিকেট, টাগ-অব-ওয়ার, মিউজিক্যাল বল, মিউজিক্যাল চেয়ার, হুইল চেয়ার রেস, স্টেন্ডিং ব্রড জাম্প ও বুসি গেইমস ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অতিথিগণ ট্রফি ও শংসাপত্র দিয়ে পুরস্কৃত করেন। বিজয়ীরা আগামী ১৮-১৯ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে অনুষ্ঠেয় রাজ্যভিত্তিক খেলো ত্রিপুরা প্যারা গ্যামসে অংশ নেবে৷