সচিবালয়ে রাজ্য সড়ক সুরক্ষা কমিটির বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনসচেতনতা৷ সতর্কতা ও জনসচেতনতা অবলম্বনের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব৷ আজ সচিবালয়ে রাজ্য সড়ক সুরক্ষা কমিটির বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনগণের সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত আবশ্যক। বৈঠকে পরিবহণ সচিব সড়ক সুরক্ষা বিষয়ে স্কুল, কলেজে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি মহড়া আয়োজনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এক্ষেত্রে তিনি ট্রাফিক, অগ্নিনির্বাপক ও জরুরি পরিষেবা এবং পরিবহণ দপ্তরকে যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন৷

বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী সড়ক সুরক্ষা বিষয়ে দপ্তরের কাজকর্মের সাফল্য, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গৃহীত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা ও নতুন উদ্যোগসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷ তিনি জানান, দপ্তর অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার সহ তথ্য প্রযুক্তি যেমন ইন্টারসেপ্টার ভেহিক্যাল, ব্রেথ অ্যানালাইজার, স্পিড রেডার গান, ই-ডার পোর্টাল ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছে৷

তিনি ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, দুর্ঘটনাগ্রস্ত লোক বা লোকেদের ৬০ মিনিটের (গোল্ডেন আওয়ারের) মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাদের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসা লোকেদের ৫ হাজার টাকা গুড সামারিটন পুরস্কার প্রদান করা হয়।

একজন গুড সামারিটনকে বছরে সর্বোচ্চ পাঁচ বার পুরস্কার দেওয়ার সংস্থান রয়েছে। হিট অ্যান্ড রান স্কিমে চিকিৎসা বাবদ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্যের সংস্থান রয়েছে। এ সুবিধাগুলি পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জেলাশাসক অফিসে সড়ক সুরক্ষা কমিটির কাছে আবেদন জানাতে পারেন। তিনি আরও জানান, সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক গঠিত সড়ক সুরক্ষা কমিটির নির্দেশিকায় সড়ক সুরক্ষা বিষয়টিকে দেখার জন্য রাজ্যে একটি ডেডিকেটেড রোড সেফটি উইং গঠনের পাশাপাশি একজন স্টেট নোডাল অফিসার নিয়োগ করার নির্দেশিকা রয়েছে।

বৈঠকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাস্তা প্রশ্বস্তিকরণ, ফুটপাথ ব্যবহার করা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাজ্য ও জেলার দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা ও ব্ল্যাকস্পটগুলিতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বেপরোয়া যান চলাচলে ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্সন সহ যেসব জরিমানার সংস্থান রয়েছে সেইসব বিষয়ে আরও জনসচেতনতা বাড়াতে বৈঠকে আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে জনসচেতনতামূলক প্রচার পুস্তিকা, মাইকিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়৷

বৈঠকে রাজ্যস্তরীয় সড়ক সুরক্ষা কমিটির সভা আয়োজনের পাশাপাশি জেলাস্তরে নিয়মিত জেলা সড়ক সুরক্ষা কমিটির বৈঠক আয়োজন করা এবং তা কেন্দ্রীয় সড়ক, পরিবহণ ও জাতীয় মহাসড়ক মন্ত্রকের পোর্টালে আপলোড করার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পায়। সড়ক সুরক্ষা, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পরামর্শদাতা নিয়োগ করার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে৷ বৈঠকে ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর উত্তম মন্ডল, ট্রাফিক পুলিশের সুপার মানিক দাস, পরিবহণ দপ্তরের যুগ্ম সচিব মৈত্রী দেবনাথ, রাজ্য সড়ক সুরক্ষা কমিটির সদস্য সদস্যাগণ সহ বিভিন্ন জেলার জেলা পরিবহণ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।