নি-ক্ষয় শিবিরের অধীনে ১০০ দিনের টিবি মুক্ত ভারত অভিযানের সূচনা সচেতনতাই টিবি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অবলম্বন ঃ মুখ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: রাজ্য থেকে টিবি রোগ চিরকালের জন্য নির্মূল করতে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি সহ সমাজের সকল অংশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আজ বিশালগড়ের নতুন টাউনহলে ১০০ দিনের টিবি মুক্ত ভারত অভিযানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এই অভিযানের সূচনা হয়েছে। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হল টিবি রোগ প্রতিরোধ করা। টিউবারকিউলোসিস (টিবি) একটি সংক্রামক ব্যধি, যা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে টিবি সনাক্তকরণ, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন এবং দ্রুত চিকিৎসা হচ্ছে টিবি বা যক্ষা মুক্ত হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সচেতনতাই টিবি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অবলম্বন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়, গ্রামপঞ্চায়েতগুলিতে বাল্যবিবাহ ও বয়:সন্ধিকালে গর্ভধারণের পাশাপাশি টিবি রোগের প্রতিরোধমূলক শপথ প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার পাঠ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাজ্য থেকে টিবি রোগ দূরীকরণে ব্যপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই পিএম-নিক্ষয় পোষণ যোজনায় রাজ্যের ৯২ শতাংশ টিবি রোগী মাসে ১০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।

মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন ১০০ দিনের টিবি মুক্ত ভারত অভিযান টিবি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা নেবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ফ্ল্যাগঅফ করে ‘নি-ক্ষয় বাহন’ ভ্যানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। যারা টিবি রোগের পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে যেতে চাননা এই নি-ক্ষয় বাহন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিবি রোগ সনাক্ত ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে।

সিপাহীজলা জেলার ৬২টি গ্রামপঞ্চায়েতকে টিবি মুক্ত গ্রামপঞ্চায়েত হিসেবে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে টিবি রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নেওয়ায় নি-ক্ষয়মিত্র হিসেবে বিধায়ক সুশান্ত দেব, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. সঞ্জিব দেববর্মা, স্বাস্থ্য শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা ডা. এইচ পি শর্মা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ড. সমিত রায় চৌধুরীর হাতে মুখ্যমন্ত্রী নি-ক্ষয়মিত্র শংসাপত্র তুলে দেন।

তাছাড়াও অনুষ্ঠানে টিবি মুক্ত অভিযান এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেওয়ায় জেলার তিনজন আশাকর্মী সহ ৫টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রকে পুরস্কৃত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী আশাকর্মী ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারগুলি তুলে দেন। তাছাড়াও অনুষ্ঠানে টিবি রোগে আক্রান্ত ৩জন রোগীর পরিবারের হাতে পুষ্টিকর খাদ্যের প্যাকেটও তুলে দেওয়া হয়৷ অনুষ্ঠানে টিবি মুক্ত এবং বাল্যবিবাহ ও বয়:সন্ধিকালে গর্ভধারণ প্রতিরোধমূলক শপথ গ্রহণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক তফাজ্জল হোসেন, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ড. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, এসপি বি জে রেড্ডি, বিশালগড় পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন অঞ্জন পুরকায়স্থ বিশালগড় পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান অতশী দাস, সিপাহীজলা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক রিংকু লাথের, স্টেট টিবি অফিসার ডা. নূপূর দেববর্মা, বিশালগড়, সোনামুড়া ও জম্পুইজলা মহকুমার মহকুমা শাসক ও সিপাহীজলা জেলার বিভিন্ন ব্লকের বিডিওগণ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপাহীজলা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. দেবাশিস দাস।

Recent Posts