পর্যটন এখন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে চিহ্নিত : পর্যটনমন্ত্রীঅনলাইন ডেস্ক, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪: পর্যটন এখন আর নিছক বিনোদনের মাধ্যম নয়। পর্যটন এখন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে চিহ্নিত। যে কোনও দেশ বা রাজ্যের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত পর্যটন পরিকল্পনা। সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের রাজ্যেও পর্যটনকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রাজ্য বিধানসভায় সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক বিধায়ক কল্যাণী সাহা রায়ের আনীত একটি দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের উত্তরে একথা বলেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশটি ছিলো ‘পর্যটকদের ত্রিপুরা রাজ্যে আরও বেশি আকর্ষিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া সম্পর্কে ।
বিধানসভায় পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, আগামীদিনে ভারতবর্ষের পর্যটন মানচিত্রে ত্রিপুরা এক অনন্য স্থান অর্জন করতে সক্ষম হবে। রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। রাজ্যে স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৫১ পীঠের এক পীঠ ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির, নীরমহল, ডম্বুর ও ছবিমুড়াকে সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলেছে।
রাজ্যের পর্যটনস্থলগুলিতে অবস্থিত জলাশয়গুলিতে ব্যবহারের জন্য ইতিমধ্যে ৫০টি বোট এবং দুটি আধুনিক বাস ক্রয় করা হয়েছে। আধুনিক পর্যটনের সমস্ত ব্যবস্থা ত্রিপুরায় রয়েছে। বিধানসভায় পর্যটনমন্ত্রী জানান, স্বদেশ দর্শন ১.০ প্রকল্পের মাধ্যমে আগরতলা, সিপাহীজলা, মেলাঘর, উদয়পুর, অমরপুর, মন্দিরঘাট, তীর্থমুখ, নারিকেলকুঞ্জ, ডম্বুর, আমবাসা, নীরমহল এবং বড়মুড়া ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরকে একটি আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পর্যটন মন্ত্রক কর্তৃক প্রসাদ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭.৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রাজ্যের পর্যটন পরিকাঠামো বিকাশের লক্ষ্যে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় ছবিমুড়া, কৈলাসহরের সোনামুখী এলাকা, চতুর্দশ দেবতা মন্দির এবং কসবা কালী মন্দির চত্বরের পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। বিধানসভায় পর্যটনমন্ত্রী জানান, রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে আগামীদিনে জেলাভিত্তিক প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে হোম স্টে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডম্বুরের নারিকেলকুঞ্জের পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ৯টি হোম স্টে এবং জম্পুইহিলে ৪টি হোম স্টে চালু করা হয়েছে।
উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক (ডোনার)-এর আওতাধীন নর্থ ইস্ট স্পেশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিম (এনইএসআইডিএস) প্রকল্পে নারিকেলকুঞ্জের আশেপাশে আরও কয়েকটি আইল্যান্ডকে পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পে ঊনকোটি এবং আগরতলার ডেস্টিনেশনগুলিকে সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে এই দুটি ডেস্টিনেশনের জন্য প্রায় ১৪০.০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি জানান, ভারত সরকারের অর্থমন্ত্রক ৫১ শক্তিপীঠের অবিকল প্রতিরোধ (রেপ্লিকা) স্থাপনের লক্ষ্যে ৯৭.৭০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। ইতিমধ্যে ৬৪,৪৮২ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশটির উপর অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা, বিধায়ক দীপঙ্কর সেন, বিধায়ক শৈলেন্দ্র দেবনাথ।