মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসুচির ৩৪ তম পর্ব, লোকনাথ ভৌমিককে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪: শারদোৎসবের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ থেকে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচি শুরু করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচির ৩৪ তম পর্বে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অন্যান্য দিনের মতো আজও মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনগণের নানাবিধ সমস্যা, অভাব ও অভিযোগ শুনেন। এরমধ্যে বেশির ভাগই এসেছেন চিকিৎসা সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে৷
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আসা প্রত্যেকের সমস্যা নিরসনে মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে নরসিংগড়স্থিত ভাগলপুরের লোকনাথ ভৌমিক আর্থিক সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। দৃষ্টিহীন লোকনাথ ভৌমিকের বাবাও ১০০ শতাংশ দৃষ্টিহীন এবং মা ৩০ শতাংশ দৃষ্টিহীন। তিনজনই দৃষ্টিহীন হওয়ায় পরিবারের কেউই বর্তমানে উপার্জনশীল নন। এই অবস্থায় জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তার পরিবারের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী লোকনাথ ভৌমিকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ড: সমিত রায় চৌধুরীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে লোকনাথ ভৌমিকের পরিবারকে কিভাবে সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়কে নির্দেশ দেন৷
রামনগরের সুলেখা চক্রবর্তী তার চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন৷ সুলেখা চক্রবর্তীর দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে৷ কিডনির সমস্যার পাশাপাশি তিনি বর্তমানে চোখের সমস্যায়ও ভুগছেন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি তার সঠিক চিকিৎসাও করাতে পারছেন না৷ সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আর্থিক সহায়তা প্রদানের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী সুলেখা চক্রবর্তীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার নির্দেশ দেন।
প্রতাপগড়ের টিংকু ঋষিদাস আর্থিক সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।এবছরের জানুয়ারী মাসে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের সংস্পর্শে টিংকু ঋষিদাসের দুটো হাত মারাত্মকভাবে জখম হয়।ফলে চিকিৎসকরা টিংকু ঋষিদাসের দুটো হাতই কেটে ফেলতে বাধ্য হন। দুটো হাতই কাটা যাওয়ার ফলে পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি টিংকু ঋষিদাস বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে পরিবারের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান৷ মুখ্যমন্ত্রী টিংকু ঋষিদাসের কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ড. সমিত রায় চৌধুরীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন৷ পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে টিংকু ঋষিদাসের পরিবারকে কিভাবে সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়কে নির্দেশ দেন।
আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে কাঁঠালতলীর সুশান্ত মোদক তার চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পেশায় রিক্সাচালক সুশান্ত মোদক বেশ কয়েকমাস যাবত স্নায়ুরোগে ভুগছেন। এমন অবস্থায় তিনি পরিবারের ভরণপোষনের জন্য রিক্সাও চালাতে পারছেন না। পারিবারিক আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ তিনি তার চিকিৎসাও সঠিকভাবে করাতে পারছেন না।এমত অবস্থায় সুশান্ত মোদক তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা পেতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন।
মুখ্যমন্ত্রী সুশান্ত মোদকের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার নির্দেশ দেন। এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আসা প্রত্যেকের সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড: প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী, অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ এস দেববর্মা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ড: সমিত রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Recent Posts